বিজয় বার্তা ২৪ ডট কম
সরকারের যথাযথ প্রস্তুতি ও অব্যবস্থাপনার কারণে সারাদেশে করোনা ভাইরাস ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরি করেছে। গণসংহতি আন্দোলন সারা দেশের মতো নারায়ণগঞ্জেও করোনা মোকাবেলায় ‘স্বাস্থ্যগত জরুরী অবস্থা’ ঘোষনা দাবির পাশাপাশি নাগরিকের জানমালের দায়িত্ব নিয়ে কার্যকর লকডাউন বাস্তবায়নসহ বিভিন্ন দাবী সরকারের কাছে উপস্থাপন করে।
গণসংহতি আন্দোলন নারায়ণগঞ্জ জেলার সমন্বয়কারী তরিকুল সুজন বলেন, ৮মার্চ নারায়ণগঞ্জে প্রথম করোনা সনাক্ত হবার পর ২মাস অতিবাহিত হয়েছে। জনগণের রাজনৈতিক শক্তি হিসেবে গড়ে ওঠা দল হিসেবে নারায়ণগঞ্জবাসীর প্রতি আমাদের দায়বদ্ধতা রয়েছে। এই জাতীয় দুর্যোগে গণসংহতি আন্দোলন সাংগঠনিক ভাবে যেসকল কার্যক্রম নিয়ে মানুষের পাশে ছিলো, তা আগামীদিনে অব্যহৃত থাকবে।
করোনা পরিস্থিতিতে মানুষ যাতে আতঙ্কিত না হয় সেজন্য সচেতনামূলক প্রচারনা দিয়ে আমরা আমাদের কাজের যাত্রা শুরু করি। ১১মার্চ বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশন এর উদ্যোগে শহীদ মিনারে ‘মাস্ক বানানো ও বিনামূল্যে বিতরন’ কর্মসূচির মধ্য দিয়ে গণসংহতি আন্দোলন করোনা মোকাবেলায় প্রথম কর্মসূচি গ্রহণ করে। এই কর্মসূচির ধারাবাহিকতায় নারায়ণগঞ্জ সদর, সিদ্ধিরগঞ্জ, বন্দর, ফতুল্লাসহ জেলাজুড়ে প্রায় ৭০০০ হাজার মাস্ক বিতরন করা হয়। ২২ মার্চ থেকে পপি রানী সরকারের উদ্যোগে শহরজুড়ে ৩০টি সচেতনামূলক ফেস্টুন লাগানো এবং প্রায় ৩০০০ মানুষের মাঝে হ্যান্ড ওয়াশ বিতরন করা হয়। ২৫মার্চ থেকে আমরা যান-বাহন, মসজিদ-মন্দির-ধর্মালয়, বিভিন্ন অফিস, হাসপাতালসহ বিভিন্ন এলাকায় বাসা-বাড়িতে জীবানু নাশক স্প্রে এবং ২৮ মার্চ থেকে ‘সামাজিক দূরত্ব চিহ্নিতকরণ বৃত্ত’ আকাঁর কাজ ধারাবাহিকভাবে চলতে থাকে।
এদেশের সাধারন খেটে খাওয়া মেহনতি মানুষেরা এই দুর্যোগে সবচেয়ে অসহায় অবস্থায় আছে । সেই উপলব্ধি থেকে ৩০ মার্চ গার্মেন্ট শ্রমিক সংহতির উদ্যোগে প্রায় ২০০ শতাধিক শ্রমিক পরিবারের মাঝে খাদ্য সহযোগিতা পৌছে দেয়া হয়। ২এপ্রিল রবীদাস পাড়ার ৪১টি পরিবার এবং নন্দীপাড়ার ২০টি পরিবারের মাঝে খাদ্য সহায়তা দেয়া হয়। এছাড়াও হকার-মুচিসহ ৫০টি দরিদ্র পরিবারের মাঝে নগদ অর্থ সহযোগিতা করা হয়। ৬ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জ সাংস্কৃতিক জোটের সহায়তায় রেলী বাগানে স্বল্প আয়ের মানুষের মাঝে খাদ্য সহায়তা দেয়া হয় এবং গলাচিপা, চানমারী এলাকার স্বল্প আয়ের মানুষের মাঝে ৫০টি করে ১০০টি পরিবারের মাঝে খাদ্য সহায়তা দেয়া হয়। এছাড়াও নিয়মিত ভাবে শ্রমজীবী মানুষের মাঝে নগদ অর্থ সহযোগিতা প্রদান করা হয়। এখন পর্যন্ত আমরা স্বল্প আয়ের মানুষের মাঝে খাদ্য অথবা নগদ অর্থ সহযোগিতা চলমান রেখেছি।
গণসংহতি আন্দোলন নারায়ণগঞ্জ জেলার নির্বাহী সমন্বয়কারী অঞ্জন দাস বলেন, নারায়ণগঞ্জ যখন কার্যত রেড জোন ঠিক সেই সময়টায় ১এপ্রিল থেকে আমরা নগরবাসীর স্বার্থে ‘জরুরী সেবা’ হিসেবে লকডাউন বাসাবাড়িগুলোতে ‘জরুরী ঔষধ ও বাজার’ পৌছে দেবার সেবা চালু করি। আমাদের জরুরী সেবার পরিসর বৃদ্ধি করা হয়েছে। গত ২মে জরুরী সেবার অংশ হিসেবে আমরা যথাযথ দায়িত্ব ও প্রস্তুতি নিয়ে আমলাপাড়া নিবাসী একজন করোনায় আক্রান্ত ব্যাক্তির মৃতদেহ সৎকার সম্পন্ন করি এবং সামনের দিনগুলোতে করোনায় আক্রান্ত পরিবারগুলোর পাশে সকল ধরনের সুযোগ সুবিধা পৌছে দিয়ে পাশে থাকার চেষ্টা চালিয়ে যাবো। এছাড়াও খাদ্য সংকটে ভুক্তভোগীদের মাঝে খাদ্য সহযোগিতা চালু রয়েছে। আমাদের সার্বিক কাজে নারায়ণগঞ্জবাসীকে অতীতের ন্যায় পাশে পাবো বলে আমরা আশা রাখি।