বিজয় বার্তা ২৪ ডট কম
করোনা ভাইরাসে ভয়াবহ হয়ে উঠেছে পুরো নারায়ণগঞ্জ। প্রতিনিয়তই বাড়ছে মৃত ও আক্রান্তের সংখ্যা। লকডাউন করে দেওয়া হয়েছে সমস্ত জেলা। তাই কর্মহীণ হয়ে পরেছে অসংখ্য মানুষ। আর এই কর্মহীন অসহায় মানুষের পাশে দাড়াতে নিরবেই মহামারীর শুরু থেকে কাজ করে যাচ্ছেন নাসিকের ১৬ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর শেখ নাজমুল আলম সজল। প্রয়াত কমিশনার শেখ নিজাম আলমের বড় ছেলে এই কাউন্সিলর সজল। যিনি কাজ করে গেছেন মানুষের জন্য। তারই পথ ধরে ও প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী করোনা প্রতিরোধে নিজ অর্থায়নে হ্যান্ড স্যানিটাইজার ও খাদ্য সামগ্রী ওয়ার্ডাবাসীর ঘরে ঘরে পৌছে দিচ্ছেন তিনি। এছাড়াও আশে পাশের এলাকাগুলোতেও বাড়িয়ে দিচ্ছেন সহযোগীতার হাত। আর এসব কাজে কাউন্সিলর সজলের কয়েকজন বন্ধু ও তার ছোট ভাই শেখ সাফায়েত আলম সানি সহ আরো কয়েকজন সহযোগীতা করছেন। এছাড়া ওয়ার্ডের রাস্তাঘাট প্রতিদিন জীবানুনাশক ঔষধ ছিটানোর ব্যবস্থা করেছেন। পাশাপাশি মশার ঔষধও স্প্রে করছেন তিনি। ওয়ার্ডবাসীর সেবায় দিনরাত কাজ করে যাচ্ছেন কাউন্সিলর সজল।
করোনা মহামারীর শুরুতেই কাউন্সিলর সজল নিজ অর্থায়নে প্রায় ৫ হাজার স্যানিটাইজার বোতল তৈরি করেছেন। প্রথমে স্থানীয় দোকানদের প্রদান করেছেন। যাতে করে টাকার সাথে মানুষের শরীরে ভাইরাস না ছড়ায়। দোকানদারও এই হ্যান্ড স্যানিটাইজার পেয়ে হাতে দিয়ে টাকা গুনে তারপর মানুষের কাছে প্রদান করছেন। এছাড়া তিনি এই স্যানিটাইজার স্থানীদের বাড়ি বাড়িও পৌছে দিয়েছেন।
৩ এপ্রিল থেকে দুর্যোগকালীন কর্মহীন হয়ে পড়া স্থানীয় ওয়ার্ডের ৩ হাজার পরিবারের বাড়ি বাড়ি যেয়ে খাদ্য সামগ্রী পৌছানো শরু হয়। নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের সংসদ সদস্য এ.কে.এম সেলিম ওসমানের পক্ষ থেকে কাউন্সিলরের নিকট প্রদানকৃত ৭ হাজার কেজি চাউল এবং কাউন্সিলর সজলের উদ্যোগে ১৮ হাজার কেজি (সর্বমোট ২৫ হাজার কেজি) চাউল এবং ‘স্লোগান’ সংগঠনের পক্ষ থেকে প্রদানকৃত ৫ হাজার কেজি আটা ২৫০০ দুঃস্থ পরিবারের কাছে কাউন্সিলরের পক্ষ থেকে পৌছে দেওয়া হয়েছে। যার মধ্যে প্রতিটি পরিবার পাচ্ছে ১০ কেজি চাউল এবং ২ কেজি আটা। এছাড়া, নারায়ণগঞ্জ ক্লাব লিমিটেডের সভাপতি তানভীর আহমেদ টিটুর দেওয়া ৫০০ প্যাকেট খাদ্য সামগ্রী (চাল, ডাল, তেল, পেঁয়াজ, আলু ও লবন) কাউন্সিলর শেখ নাজমুল আলম সজল এর কাছে হস্তান্তর করেন। যা ১৬নং ওয়ার্ডের আরো ৫০০ টি অসহায় পরিবারের মাঝে কাউন্সিলরের মাধ্যমে বিতরণ করা হয়েছে। এদিকে প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া নাসিকের থেকে প্রাপ্ত সরকারী খাদ্য সামগ্রী ৫৪০ পরিবারেরর মাঝে বিতরণ করেছেন। এই কাউন্সিলর মানবতার কথা চিন্তা করে করোনা ভাইরাসে বা অন্যভাবে মৃত্যুবরন করলে তাদের দাফনের জন্য আট সদস্য বিশিষ্ঠ একটি সেচ্ছাসেবী দল তৈরি করেছেন। যাদের সুরক্ষা ব্যবস্থা্ও তিনি ব্যক্তিগতভাবে করে দিয়েছেন।যারা ১৬ নং ওয়ার্ডের মৃত ব্যক্তিদের দাফন কার্য সম্পাদন করবেন। এদিকে রমজান মাস উপলক্ষে আরো দুই হাজার পরিবারকে খাদ্য সামগ্রী পৌছে দেওয়ার পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে এই কাউন্সিলর।
এ বিষয়ে কাউন্সিলর নাজমুল আলম সজল বলেন, মরনঘাতি করোনার আঘাতে পরিস্থিতি সামাল দিতে হিমশিম সারা বিশ্ব।
দেশ আজ দেশরত্ন জননেত্রী শেখ হাসিনার ডায়নামিক ও বলিষ্ঠ নেতৃত্বেগুণে সদ্য বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশ থেকে মধ্যম আয়ের দেশে রূপান্তরিত হচ্ছে। সেইখানে দীর্ঘদিন লকডাউন থাকার ফলে আমাদের খেটে খাওয়া মানুষদের কর্মহীন হয়ে পড়ে খুব মানবেতর জীবনযাপনের সম্মুখীন হচ্ছে। আমার পূর্বপুরুষ এবং আমি সততা ও নিষ্ঠার সাথে রাজনীতির মাধ্যমে সমাজসেবা করে আসছি। আমরা রাজনীতি কোন দোকানদারি করার জন্য করি না এবং আমি আমার পূর্বপুরুষের আমরা কখনো অসৎ পথে কোনো টাকা উপার্জনে লালিত হইনি। সৎ ভাবে উপার্জন করে আমরা জীবন যাপন করি। কিন্তু সাধারণ মানুষদের এই মানবেতর জীবনযাপন দেখে ঘরে বসে থাকা কোন বিবেকবান মানুষের কাজ হবে না। আমি মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান তাই আমি যতটুকু পারছি আমার ব্যক্তিগতভাবে আমার কিছু বন্ধু ও আমার ছোট ভাইদের নিয়ে আমি তাদের পাশে দাঁড়ানোর যথাসাধ্য চেষ্টা করছি।
তিনি আরো বলেন, আমি সমাজের সকল বিত্তবানদের কাছে উদাত্ত আহ্বান জানাচ্ছি, এটা কারো একার যুদ্ধ না। আমরা ১৮ কোটি মানুষ একসাথে যদি এক ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াই করতে পারি এবং মানবিক হয়ে একজন আরেকজনের পাশে দাঁড়াতে পারি তবে এই যুদ্ধে জয়লাভ করা সম্ভব। ভাইরাস যেমন মহামারী আকারে আমাদের জীবন বিনষ্ট করছে তদ্রূপ আমি মনে করি একজন মানবিক মানুষ হিসেবে আমাদের সুযোগ এসেছে আল্লাহকে খুশি করার জন্য এই কর্মহীন মানুষদের দু’বেলা খাবারের ব্যবস্থা করে দিয়ে মানবিক মানুষ হিসেবে সমাজের উদ্দেশ্যে প্রতি দায়িত্ব পালন করা।