বিজয় বার্তা ২৪ ডট কম
শুল্কা তিথি অনুযায়ী আগামীকাল সোমবার লাঙ্গলবন্দে শুরু হচ্ছে মহাতীর্থ অষ্টমী স্নান উৎসব। দুইদিনব্যাপী এ স্নান উৎসব শেষ হবে মঙ্গলবার।
প্রতিবারের মতো এবারও দেশ-বিদেশ থেকে লাখ লাখ পূণ্যার্থী অংশ নেবে এ স্নান উৎসবে। এ স্নান উপলক্ষে প্রশাসন সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে। এ বছর স্নান এলাকায় কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে জেলা প্রশাসন।
জেলা পুলিশ সুপার মঈনুল হক জানান, ১৭টি ঘাটে প্রায় লক্ষাধিক পুণ্যার্থীর সমাগম ঘটবে। প্রতিটি ঘাট সিসি ক্যামেরার আওতায় আনা হয়েছে। ঢাকা-চট্রগ্রাম রুটেও কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। কোন প্রকার দোকান-পাট কিংবা কোন হকার ঘাটের আশ পাশে থাকা যাবেনা। হিন্দু সম্প্রদায়ের পুন্যার্থী ব্যাতিত কেউ যাতে ঘাটগুলোতে আনাগোনা করতে না পারে সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। স্নানকালে পুন্যার্থীদের কোন ছবি তোলা যাবেনা। সার্বক্ষণিকভাবে একজন করে এএসপি এবং একজন করে সার্কেল এএসপি থাকবে। আমাদেরকে মনে রাখতে হবে লাঙ্গলবন্দ স্নানোৎসবের সাথে বাংলাদেশ পুলিশের সম্মান জড়িত। সুতরাং যে কোন মূল্যে অপ্রীতিকর ঘটনা রোধে পুলিশকে সদা সতর্ক থাকতে হবে। ১ হাজার ২শ ৭ ৭জন পুলিশ, আনসার ৩শ ৩৬ র্যাব, কোষ্টগার্ড নৌ পুলিশ।
এছাড়াও পুলিশের সঙ্গে র্যাব ও আনসার সদস্যরা সারাক্ষণ টহলে থাকবেন। স্নানে যানজট নিরসনের জন্য সোমবার রাত ১২টা থেকে স্নান এলাকায় যানবাহন প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হয়। এ স্নান উৎসব উপলক্ষে মহাতীর্থ লাঙ্গলবন্দ স্নানোৎসব উদযাপন পরিষদ, শ্রী গুরু সংঘ, বাংলাদেশ সনাতন ধর্ম সহামণ্ডল, সেবাসংঘ, সাধু নাথ মহাশয় আশ্রমসহ বিভিন্ন ধর্মীয় সামাজিক সংগঠন আলোচনা, কীর্তন, প্রার্থনা সভা, পূজা পুণ্যার্থীদের সেবা চিকিৎসা প্রদানসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করবে। প্রতিবছরের ন্যায় এ বছরও লাঙ্গলবন্দের তিন কিলোমিটার এলাকা জুড়ে বসেছে বর্ণাঢ্য লোকজ মেলা।
প্রসঙ্গগত, ব্রহ্মপত্রের জল পাপমুক্ত করেছিল পরশুরাম মুনিকে। হিন্দু ধর্মাবলম্বী লোকজন মনে করেন, মহাভারতের বর্ণনা মতে পরশুরাম মুনি পাপমুক্তির জন্য ব্রহ্মপুত্রের নদের যে স্থানের জলে স্নান করেছিলেন তা লাঙ্গলবন্দে অবস্থিত। তৃতা যোগ সেই কাল থেকে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের বিশ্বাস এসময় ব্রহ্মপুত্র নদে স্নান খুবই পূণ্যের। এ স্নানের ফলে ব্রহ্মার সন্তুষ্টি লাভের মাধ্যমে পাপমোচন হয়। এ বিশ্বাস নিয়ে সুদীর্ঘকাল ধরে এ স্নানে অংশ নেয়ার জন্য উপমহাদেশের এবং দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে অসংখ্য মানুষ আসেন লাঙ্গলবন্দে। পাপস্খলনের এই উৎসবে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের লাখো লাখো মানুষ এখানে এসে সমবেত হয়। পরশুরাম মুনির পাপ থেকে মুক্ত হওয়ার কথা স্মরণ করে শ’ শ’ বছর ধরে লাঙ্গলবন্দে ব্রহ্মপুত্র নদে এ অষ্টমী স্নান অনুষ্ঠিত হয়।