মো: শরীফুল ইসলাম, hবিজয় বার্তা ২৪ ডট কম
নারায়ণগঞ্জের আলোচিত পিয়ার সাত্তার লতিফ উচ্চ বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক শ্যামল কান্তি ভক্তের কানধরে উঠ-বসের ঘটনায় স্থানীয় নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের জাতীয় পার্টি’র এমপি সেলিম ওসমান জড়িত কিনা-সে বিষয়ে বিচার বিভাগীয় প্রতিবেদন দাখিল করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি জে বি এম হাসানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চে এই প্রতিবেদন দাখিল করা হয়। আদালতের ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মোতাহার হোসেন সাজু বলেন, এ ঘটনায় অডিও রেকর্ড, ভিডিও ক্লিপিং, পেপার কাটিং ও সাক্ষীদের সাক্ষ্যগ্রহণ পর্যালোচনা করে ৬৫ পৃষ্ঠার পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন হলফনামা আকারে আদালতে জমা দেওয়া হয়েছে। আগামী রোববার বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি জে বি এম হাসানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চে এর শুনানি অনুষ্ঠিত হবে।
এর আগে গত বছরের ১০ আগস্ট এই ঘটনায় স্থানীয় এমপি সেলিম ওসমান জড়িত কি না- সে বিষয়ে বিচার বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দেন হাইকোর্ট।
ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেটকে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়। ওই দিন আদালত আদেশে বলেন, স্থানীয় এমপি সেলিম ওসমানের স¤পৃক্ততা নেই মর্মে পুলিশের প্রতিবেদনে প্রকৃত সত্য তুলে ধরা হয়নি। পুলিশের প্রতিবেদন অসম্পূর্ণ ও অগ্রহণযোগ্য।
এর আগে গত বছরের ১৮ মে নারায়ণগঞ্জে স্কুল শিক্ষককে কান ধরে উঠবস করার ঘটনায় স্থানীয় এমপি সেলিম ওসমানসহ জড়িতদের বিরুদ্ধে কেন আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হবে না- তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন হাইকোর্ট।
সাবেক অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল এম কে রহমান ও জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মহসিন রশিদ পত্রিকায় প্রকাশিত শিক্ষকের কান ধরে ওঠ-বস করার ঘটনায় প্রতিবেদন আদালতে উপস্থাপন করেন। এরপর আদালত স্বতপ্রণোদিত হয়ে রুল জারি করেন।
গত বছরের ১৪ মে ইসলাম ধর্ম অবমাননার অভিযোগে নারায়ণগঞ্জের পিয়ার সাত্তার লতিফ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শ্যামল কান্তি ভক্তকে বিদ্যালয়ের ভেতরে অবরদ্ধ করে মারধর করা হয়। পরে স্থানীয় নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের এমপি সেলিম ওসমান জনতার রোষানল থেকে শিক্ষক শ্যামল কান্তিকে বাচাঁতে কৌশল অবলম্বন করেন। পরিস্থিতি আঁচ করতে পেরে শ্যামল কান্তি নিজেই জনতার উদ্দেশ্যে হাতজোড় করে ক্ষমা এবং কান ধরে ওঠ-বস করেন। এসময় এমপি আঙ্গুল ইশারা দিয়ে তাকে উঠবস করিয়ে দ্রুত পুলিশ দিয়ে শিক্ষককে হাসপাতালে পাঠিয়ে দেন। সকাল ১০টা থেকে শ্যামল কান্তি স্কুলে অবরদ্ধ হন বিকাল ৫টায় প্রশাসনের অনুরোধে এমপি সেলিম ওসমান ঘটনাস্থলে যেয়ে পরিস্থিতি সামাল দেন। পরবর্তিতে এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ ম্ধ্যামে ফেইজবুকে প্রতিবাদের জড়িতদের বিচারের দাবি ঝড় উঠে।