বিজয় বার্তা২৪ ডটকমঃ
বেড়েছে আমদানি, চাহিদার তুলনায় পর্যাপ্ত মজুদ রয়েছে দেশী পেঁয়াজেরও, আর তাই এবছর রমজানে পেঁয়াজ সংকটের কোন সম্ভাবনা নেই। এমন আশ্বাস দিয়ে ব্যবসায়ীরা বলছেন, আমদানি যদি কমেও যায়, এরপরও বড় ধরণের প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে রোজায় বাড়বে না পেঁয়াজের দাম। তবে অতীত অভিজ্ঞতা বিবেচনায় শেষ পর্যন্ত পেঁয়াজের বাজার স্থিতিশীল থাকবে কি না তা নিয়ে অনিশ্চিত বাজার বিশ্লেষকরা। এক্ষেত্রে টিসিবির বিপণন কার্যক্রম জোরদার করার পাশাপাশি যৌক্তিক দামে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে সরকারী উদ্যোগ নেয়ার তাগিদ তাদের।
দেশীয় আবাদ পদ্ধতিতে দুটি উপায়ে পেঁয়াজ উৎপাদন করেন চাষিরা, শিকড় থেকে চাষ করা পেঁয়াজ বাজারে আসে ডিসেম্বরে আর বীজ থেকে উৎপাদিত পেঁয়াজ আসে এপ্রিল মে মাসে। ২৫ লাখ টন বার্ষিক চাহিদার বিপরীতে বাংলাদেশে উৎপাদিত হয় পনেরো লাখ টন পেঁয়াজ, বাকি ১০ লাখ টন আমদানি করা হয়।
মজুদ শেষ হতে থাকায় প্রতিবছর সেপ্টেম্বর থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত দেশের বাজার পুরোপুরি নির্ভরশীল থাকে ভারতীয় পেঁয়াজের উপর। কিন্তু সাম্প্রতিক বছরগুলোতে জুন জুলাইয়ে রমজান শুরু হওয়ায় পেঁয়াজের দামের ঊর্ধ্বগতি দেখা গেছে কিছুটা আগেভাগেই।
২০১৩ ও ২০১৫ সালের জুন থেকে নভেম্বর পর্যন্ত পেঁয়াজের বাজার দর উঠেছিলো ৯০ টাকায়, তবে ব্যতিক্রম ২০১৪ ও ২০১৬, এই দুই বছরের জুন থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত স্থিতিশীল ছিলো পেঁয়াজের বাজার, দামও ওঠানামা করেছে ৩০ থেকে ৪০ টাকার মধ্যে। সে চিত্র অপরিবর্তিত থাকবে এবারও, পেঁয়াজের বাজার দর থাকবে ৩০-৩৫ টাকার মধ্যেই, এমন আশ্বাস ব্যবসায়ীদের।
অজুহাত দেখানো মতো কিছু এবার নেই। এখন দিনে দুইশ টন বিক্রি হয়। রোজার মধ্যে ছয়শ টন বিক্রি হবে। এই ক্ষেত্রে হয়তো পঁচিশ টাকার মাল আটাশ টাকা হতে পারে। এটা স্বাভাবিক। অস্বাভাবিক কিছু হবে না।’
বাজার বিশ্লেষকরা বলছেন, প্রতিযোগিতামূলক বিপণন কাঠামো গড়ে না ওঠায়, ক্রেতা চাহিদাকে পুঁজি করে অযৌক্তিক হারে নিত্য পণ্যের দাম বাড়ানোর জন্য রাজনৈতিক ক্ষমতা ব্যবহার করেন কোন কোন ব্যবসায়ী।
মিজানুর রহমান বলেন, ‘টিসিবিকে আরো বেশি সক্রিয় হতে হবে। তাদের নজরদারী বাড়াতে হবে এবং নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য বাজারে পর্যাপ্ত করতে হবে। যাতে ইচ্ছে করলেই ব্যবসায়ীরা দামটা বাড়াতে না পারে।’
বিভিন্ন ধরণের ইফতারসামগ্রী তৈরি ছাড়াও ভোক্তা পর্যায়ে চলতি বছর রমজানে শুধুমাত্র ঢাকা মহানগরীতেই প্রতিদিন ৬’শ টনের বেশি পেঁয়াজের চাহিদা থাকবে। যা মেটানোর লক্ষ্যে এর মধ্যেই আমদানি করা হয়েছে প্রায় ৬ হাজার টন পেঁয়াজ। প্রতি টন ১শ ৮০ ডলার হিসেবে এলসি খোলা হয়েছে আরো ৩২ হাজার টন পেঁয়াজের।