বিজয় বার্তা ২৪ ডট কম
চাষাঢ়া কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে উন্মেষ সাংস্কৃতিক সংগঠনের আয়োজতি রবীন্দ্র জয়ন্তী উৎসবে ছাত্রলীগের হামলার বিষয়টি মিথ্যাচার বলে দাবি করে সংবাদ সম্মেলন করেছেন নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর ছাত্রলীগ।
বৃহস্পতিবার দুপুরে সরকারি তোলারাম বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের ছাত্রছাত্রী সংসদে এক যৌথ সংবাদ সম্মেলন এ দাবি করা হয়।
এর আগে নারায়ণগঞ্জ প্রেস ক্লাবে এক সংবাদ সম্মলনে শহীদ মিনারে আয়োজিত রবীন্দ্র জয়ন্তীর অনুষ্ঠানস্থল দখল করে ভাঙচুর করার অভিযোগ করেন উন্মেষের নেতারা।
এদিকে এই ঘটনায় শুক্রবার গনমাধ্যমে বাংলাদেশের ২২ জন্য বুদ্ধিজীবী রফিউর রাব্বী ও উন্মেষের পক্ষ নিয়ে একটি বিবৃত্তি দেন। যেখানে এর তীব্র নিন্দা জানান তারা। যার কারনে শহরময় চলছে সমালোচনার ঝড়।
ছাত্রলীগ নেতৃবৃন্দ প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানান, নারায়ণগঞ্জের গুটিকয়েক বামঘরানার জনবিচ্ছিন্ন লোকজন ও ঢাকা থেকে আসা কিছু বাম নেতা প্রায়শই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও নারায়ণগঞ্জের ঐতিহ্যবাহী ওসমান পরিবারের বিপক্ষে কুরুচিপূর্ণ, বিতর্কিত সমালোচনা করে যাচ্ছেন। এই জনবিচ্ছিন্ন দলের প্রধান রফিউর রাব্বি নিজেকে স্বাধীনতার পক্ষের লোক পরিচয় দিয়ে জামায়াতের অর্থায়নের পরিচালিত দিগন্ত টেলিভিশন খুলে দেয়ার দাবিতে মানববন্ধনও করেছেন। আবার গিরগিটির মত রঙ পাল্টে নিজেকে সুশীল সাজাতে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে নিয়ে সেমিনার করেন। নারায়ণগঞ্জের-৫ আসনের উপনির্বাচনে অংশ নিতে সাধারণ ভোটারদের স্বাক্ষর জালিয়াতির বিষয়টি প্রমাণিত হওয়ায় তার মনোনয়ন পর্যন্ত বাতিল পর্যন্ত হয়েছিল। চেক প্রতারণার মামালায় আদালত রফিউর রাব্বিকে কারাদণ্ড দিয়েছেন। এছাড়া সোনালী ব্যাংকের ২০ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগেও তার বিরুদ্ধে মামলা চলছে। একটি বিশেষ মহলের ইন্ধনে এই ‘আদালত-স্বীকৃত’ প্রতারক শান্ত নারায়ণগঞ্জকে অশান্ত করার এজেন্ডা নিয়ে মাঠে নেমেছেন। সম্প্রতি সংবিধানকে প্রশ্নবিদ্ধ করে এবঙ রাষ্ট্রধর্ম ইসলামের বিরুদ্ধে কথা বলে ধর্মীয় অসন্তোষ সৃষ্টির মত জঘন্য কাজও করেছে তিনি। সম্প্রতি রফিউর রাব্বি শহীদ মিনারে দাঁড়িয়ে শামীম ওসমান এমপি, তার ছেলে অয়ন ওসমান, বীর মুক্তিযোদ্ধা প্রয়াত নাসিম ওসমানের ছেলে আজমীরি ওসমানকে ফাঁসিতে ঝুলানোর মত ভয়ঙ্কর মন্তব্যও করেছেন। ছেলে তানভীর মুহাম্মদ ত্বকীর হত্যাকে পুঁজি করে রফিউর রাব্বি গত তিন বছর সরকার, সরকারপ্রধান ও ওসমান পরিবারের বিরুদ্ধে নানা অশোভন বক্তব্য দিচ্ছেন বলেও ছাত্রলীগ নেতারা অভিযোগ করেন। তৌফিক-ই-এলাহির মতো সৎ ব্যক্তিকে অর্থের বিনিময়ে জ্বালানি উপদেষ্টা করা হয়েছিল বলে রফিউর রাব্বি মন্তব্য করেছেন। আবার দেশের শিক্ষাব্যবস্থাকে ধ্বংস করেছেন বলে প্রধানমন্ত্রীকে সরাসরি দায়ী করেছিলেন তিনি। এই হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু বিচার হোক সেটা আমরাও চাই। কিন্তু রফিউর রাব্বি এদেশের আইনের ভাষায় ‘খসড়া চার্জশিট’ নামে একটি মনগড়া কাহিনীও সৃষ্টি করেছেন। তার বক্তব্যে মনে হচ্ছে- এদেশের সরকার, আইন, বিচার ব্যবস্থা এমনকি সংবিধানও তার কাছে তুচ্ছ। রফিউর রাব্বির এহেন বক্তব্যের প্রতিবাদ করতেই নারায়ণগঞ্জ মহানগর ছাত্রলীগের উদ্যোগে বুধবার একটি শন্তিপূর্ণ বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন করা হয়েছিল। ওই সমাবেশে ছাত্রলীগের হাজারো নেতাকর্মী ছাড়াও সাধারণ মানুষ ও শিক্ষার্থীরা অংশ নেয়। এসময় চাষাড়া কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে উন্মেষ সাংস্কৃতিক সংগঠনের পক্ষে রবীন্দ্র জয়ন্তীর একটি অনুষ্ঠান হওয়ার কথা জেনে আমরা বিক্ষোভ মিছিলটি চাষাড়া শহীদ মিনারের অভ্যন্তরে জমায়েত না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। কিন্তু রফিউর রাব্বির কুশপুত্তলিকা নিয়ে মিছিলটি শহীদ মিনারের কছে আসতেই সেখান থেকে তার লোকজন মিছিল লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ শুরু করে। এসময় মিছিলে থাকা শত শত শিক্ষার্থী ক্ষুব্ধ হয়ে উঠলে আমরা মহানগর ছাত্রলীগের নেতারা তাদের শান্ত থাকতে বলি’ দাবি করেন তারা। ‘এরপরেও সেখান থেকে ফের ইট-পাটকেল নিক্ষেপ ও অশ্রাব্য ভাষায় গালাগাল করতে থাকে। এসময় মিছিলের একটি অংশ শহীদ মিনারে প্রবেশ করতে উদ্যত হলে রফিউর রাব্বির ১০/১২ জন পোষ্য ও কয়েকজন বামঘরানার লোক সেখান থেকে দৌড়ে পালিয়ে যায়। আমাদের মাতৃতুল্য নেত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আর কোনো কুরুচিপূর্ণ ও অশালীন বক্তব্য দেয়া হলে তার কঠোর জবাব দেয়া হবে।
জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সাফায়েত আলম সানি, সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান সুজন, মহানগর ছাত্রলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক হাসনাত রহমান বিন্দু, যুগ্ম আহ্বায়ক নাসিম মাহমুদ তপন, জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগ এবং সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দের স্বাক্ষরিত এই বিবৃত্তি সম্মলিত একটি প্রেস বিজ্ঞপ্তি অনলাইন যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক পাওয়া যায়।
প্রসঙ্গত, গত মঙ্গলবার চাষাঢ়া কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে উন্মেষ সাংস্কৃতিক সংগঠনের আয়োজতি রবীন্দ্র জয়ন্তী উৎসবে সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব রফিউর রাব্বি সহ কয়েকজন বাম নেতা তানভির রহমান ত্বকী হত্যার বিচ্যার দাবিতে রাজনৈতিক বক্তব্য দেন। যে বক্তব্যে ওসমান পরিবারের সদস্যদের নাম উল্লেখ্ করে গ্রেফতারের দাবি জানান। তারই প্রেক্ষিতে গত বুধবার রফিউর রাব্বির বিরুদ্ধে বিক্ষোভ সমাবেশ করে শহরের রাস্তায় রাব্বীর কুশপুত্তলিকা পুড়িয়ে দেয় এবং আয়োজিত অনুষ্ঠানের স্থলে অবস্থান নেওয়ার সময় মহানগর ছাত্রলীগের কিছু কর্মী চেয়ার ও সাউন্ড স্টিটেম ভাংচুর করে। এক সংবাদ সম্মলনে শহীদ মিনারে আয়োজিত রবীন্দ্র জয়ন্তীর অনুষ্ঠানস্থল দখল করে ভাঙচুর করার অভিযোগ করেন উন্মেষের নেতারা। এদিকে এই অভিযোগ মিথ্যাচার দাবি করে এক সংবাদ সম্মলন করেন মহানগর ছাত্রলীগের আহ্বায়ক হাবিবুর রহমান রিয়াদ। এই ঘটনায় শুক্রবার গনমাধ্যমে বাংলাদেশের ২২ জন্য বুদ্ধিজীবী রফিউর রাব্বী ও উন্মেষের পক্ষ নিয়ে একটি বিবৃত্তি দেন।
ঘটনাটি সরেজমিনে এসে বুদ্ধিজীবি ও প্রশাসনকে সুষ্ঠু তদন্ত পূর্বক দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন নারায়ণগঞ্জের সচেতন মহল। যাতে করে ভবিষ্যৎ এ কেউ বিশ্বকবি রবিন্দ্র নাথ ঠাকুরকে নিয়ে কোন প্রকার রাজনীতি আর না করতে পারে।