বিজয় বার্তা ২৪ ডট কম
নারায়ণগঞ্জের আলোচিত সাত খুন মামলায় আপিল ও ডেথ রেফারেন্সের শুনানিতে আসামিপক্ষের যুক্তি উপস্থাপন শেষে রাষ্ট্রপক্ষ যুক্তি উপস্থাপন শুরু হয়েছে।
বুধবার বিচারপতি ভবানী প্রসাদসিংহ ও বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলামের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চে আসামিপক্ষের যুক্তি উপস্থাপন শেষে রাষ্ট্রপক্ষের যুক্তি উপস্থাপন শুরু হয়।
আজ আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম যুক্তি উপস্থাপন শুরু করেন। সঙ্গে ছিলেন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল বশির আহমেদ।
শুনানিতে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেছেন, নারায়ণগঞ্জের চাঞ্চল্য সাত খুনের ঘটনাটি পূর্বপরিকল্পিত।
তিনি বলেন, এ মামলার রাষ্ট্রপক্ষের ৭২ নম্বর সাক্ষী সৈনিক মিলন হোসেন তার জবানবন্দিতে বলেছেন, মেজর আরিফ ঘটনার সাত দিন আগে আসামি পূর্নেন্দবালাসহ ১২ জনকে যেন কোনো ডিউটি না দেওয়া হয় এ মর্মে নির্দেশ দিয়েছিলেন।
এছাড়া রাষ্ট্রপক্ষের ৬৪ নম্বর সাক্ষী আব্দুস সালাম শিকদার তার জবানবন্দিতে বলেছেন, ২৭ এপ্রিল সকাল ১১টায় ল্যাপ্টেন কর্নেল রানা তাকে মোবাইল ফোনে বলেছেন, ফতুল্লা থানার শিবু মার্কেট এলাকায় চেকপোস্ট বসানোর নির্দেশ দিয়েছেন।
তার নির্দেশ মোতাবেক ওই চেকপোস্টে ডিউটিকালীন সময়ে একটি সাদা গাড়িতে পাঁচজন এবং একটি কালো রঙের গাড়িতে দুই ব্যক্তিকে দেখতে পাই। সাদা রঙের গাড়িতে মেজর আরিফ ও কালো রঙের গাড়িতে লে. কর্নেল রানা ছিলেন।
সাক্ষীদের এমন জবানবন্দিতে প্রমাণ হয়, নারায়ণগঞ্জের সাত খুন ছিল পূর্বপরিকল্পিত।
শুনানি শেষে এ মামলার কার্যক্রম আগামীকাল পর্যন্ত মুলতবি করেন বিচারকদ্বয়।
এর আগে গত ২২ মে সাত খুন মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের ডেথ রেফারেন্স ও আপিলের শুনানি শুরু হয়।
চলতি বছরের ৮ ফেব্রুয়ারি নারায়ণগঞ্জের আলোচিত সাত খুন মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত নুর হোসেনসহ আসামিদের নিয়মিত ও জেল আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ করেন হাইকোর্ট।
গত ৩০ ও ৩১ জানুয়ারি মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত নূর হোসেন, তারেক সাঈদসহ আসামিরা খালাস চেয়ে হাইকোর্টে আপিল দায়ের করেন।
গত ১৬ জানুয়ারি নারায়ণগঞ্জে আলোচিত সাত খুনের মামলায় সাবেক কাউন্সিলর নূর হোসেন, র্যাবের প্রাক্তন কর্মকর্তা লে. কর্নেল তারেক সাঈদ মোহাম্মদসহ ২৬ আসামিকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দিয়েছেন আদালত। বাকি ৯ আসামির সবাইকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
২০১৪ সালের ২৭ এপ্রিল বেলা দেড়টার দিকে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোড থেকে অপহৃত হন নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলর নজরুল ইসলাম, আইনজীবী চন্দন সরকারসহ সাতজন। তিন দিন পর ৩০ এপ্রিল শীতলক্ষ্যা নদীতে একে একে ভেসে ওঠে ছয়টি লাশ। পরদিন মেলে আরেকটি লাশ। নিহত অন্যরা হলেন- নজরুলের বন্ধু মনিরুজ্জামান স্বপন, তাজুল ইসলাম, লিটন, গাড়িচালক জাহাঙ্গীর আলম ও চন্দন সরকারের গাড়িচালক মো. ইব্রাহীম।
ঘটনার এক দিন পর কাউন্সিলর নজরুলের স্ত্রী সেলিনা ইসলাম বাদী হয়ে আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতা (পরে বহিষ্কৃত) নূর হোসেনসহ ছয়জনের নাম উল্লেখ করে ফতুল্লা মডেল থানায় মামলা করেন।