বিজয় বার্তা ২৪ ডট কম
আগামী একাদশ জাতীয় নির্বাচন উপলক্ষে দল গোছাতে ব্যস্ত আওয়ামীলীগ। নির্বাচনে উপর্যুপরি তৃতীয় মেয়াদে জয়ের জন্য দলের নেতাদের জনগণের ঘরে ঘরে যাওয়ার নির্দেশনা দিয়েছেন বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের সভাপতি শেখ হাসিনা। এদিকে আওয়ামীলীগকে আওয়ামীলীগের প্রতিপক্ষ না করে ঐক্যবদ্ধ হয়ে নির্বাচনে কাজ করার নির্দেশনা জানিয়েছেন বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়েদুল কাদের। সেই নির্দেশনা তোয়াক্কা করছেন না নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর আওয়ামীলীগ। নিজেদের আখের গোছাতে জড়িয়ে পরছেন তারা দলীয় কোন্দলে। নারায়ণগঞ্জ আওয়ামীলীগের সিনিয়র নেতারা একে অন্যকে ঘায়েল করতে নানা ষড়যন্ত্র চলছে বলে অভিযোগ উঠেছে। সম্প্রতি নারায়ণগঞ্জ জেলা মহানগর আওয়ামী যুব মহিলা লীগ ও জেলা কৃষকলীগের কমিটি গঠন এবং পাল্টা কমিটি গঠনকে কেন্দ্র করে শুরু হয়েছে তাদের এই নিজেদের দ্বন্ধ। এই কমিটি গঠনে দলীয় কোন্দল সৃষ্টিতে জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি আব্দুল হাই, সাধারণ সম্পাদক আবু হাসনাত শহীদ বাদল ও মহানগর আওয়ামীলীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেন, সাধারণ সম্পাদক এড. খোকন সাহা জড়িত রয়েছেন বলে তৃনমূল নেতাকর্মীদের অভিযোগ। এছাড়াও আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে আওয়ামীলীগকে ধ্বংস করতে অদৃশ্য শক্তিরা ইতিমধ্যে মাঠে নেমেছেন। তাদের হাতিয়ার হিসেবে জেলা ও মহানগর আওয়ামীলীগের প্রভাবশালী কিছু নেতাকে বেছে নিয়েছেন বলে তৃমূলের ধারনা। যেখানে নারায়ণগঞ্জ বিএনপি ও উপজেলা বিএনপির নেতৃবৃন্দ কেন্দ্রিয় নির্দেশনা মোতাবেক সদস্য সংগ্রহে অনেকটা এগিয়ে গেলেও পিছিয়ে রয়েছেন নারায়ণগঞ্জ আওয়ামীলীগ। আর এই দ্বন্ধের জের ধরে আগামী সংসদ নির্বাচনে নারায়ণগঞ্জ আওয়ামীলীগ অনেকটা বিপাকে পরবেন বলেও মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
বিগত সময়ে নারায়ণগঞ্জ আওয়ামীলীগের নেতাদের মধ্যে দ্বন্ধ নিরসন করে ঐক্যবদ্ধ করতে কাজ করেছেন নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সাংসদ ও আওয়ামীলীগ নেতা শামীম ওসমান। সম্প্রতি জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক আবু হাসনাত মোঃ শহীদ বাদল ও মহানগর আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক এড. খোকন সাহার দ্বন্ধের নিরসন করেন এই আওয়ামীলীগ নেতা। দলকে সাংগঠনিকভাবে সাজাতে ও নেতাকর্মীদের সঠিক মূল্যায়ন করতে সাংসদ শামীম ওসমানের ভূমিকা ছিল ব্যাপক। কিন্তু সেই নেতার বিরুদ্ধে ফুসে উঠেছে তারই বলয়ে থাকা কতিপয় কিছু সিনিয়র নেতা।
সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারি বাসবভন গণভবনে আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতাদের উপস্থিতিতে বৈঠকে দলীয় সভাপতি শেখ হাসিনা নেতাদের একাদশ নির্বাচনে তৃতীয় বারের মতো বিজয় লাভে জনগণের ঘরে ঘরে গিয়ে কাজ করার নির্দেশনা দেন।
তিনি আরো বলেন, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন হবে অংশগ্রহণমূলক ও প্রতিদ্বন্ধিতামূলক। এ জন্য সবাইকে আন্তরিকভাবে কাজ করতে হবে। জনগণের কাছে যেতে হবে। উঠান বৈঠক করতে হবে। সমাজের কাছে গ্রহণযোগ্য এমন ব্যক্তিদের মাঠে নামাতে হবে। একই সঙ্গে সরকারের উন্নয়নগুলো তুলে ধরে বিএনপির জামায়াতের অতীত শাসনামলে দুঃশাসনের চিত্র তুলে ধরতে হবে। ভোটার তালিকা হালনাগাদের সময় আওয়ামী লীগ সমর্থক প্রাপ্তবয়স্ক ভোটাররা যেন বাদ না পড়েন সে বিষয়ে নির্দেশনা দেন দলীয় সভাপতি। নিজ নিজ এলাকায় প্রাপ্তবয়স্করা স্বতস্ফূর্তভাবে যেন ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হন সে বিষয়ে দলীয় নেতাকর্মীদের নির্দেশ দেন শেখ হাসিনা। দলীয় সদস্য সংগ্রহ ও নবায়ন কার্যক্রম আরও গতিশীল করার জন্যও সংশ্লিষ্ট সকলকে নির্দেশ দেন তিনি।
এদিকে আওয়ামীলীগের অনুষ্ঠিত এক প্রতিনিধি সভায় আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়েদুল কাদের বলেন, নিজেদের মধ্যে কলহ করবেন না। কোন্দল করবেন না। আওয়ামীলীগকে আওয়ামীলীগের প্রতিপক্ষ বানাবেন না। আর আওয়ামীলীগ যদি আওয়ামীলীগের প্রতিপক্ষ না হয় তাহলে দলের জয় নিশ্চিত।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে আওয়ামীলীগের কেন্দ্রিয় নেতাদের নির্দেশনা অনুযায়ী নারায়ণগঞ্জ আওয়ামীলীগ ঐক্যবদ্ধ হয়ে কর্মকান্ড না চালালে আগামী সংসদ নির্বাচনে নেমে আসবে ব্যাপক পরাজয়।
তৃনমূল নেতাকর্মীদের দাবি নারায়ণগঞ্জ আওয়ামীলীগের সিনিয়র নেতারা নিজেদের মাঝে দ্বন্ধ নিরসন করে দলের তৃনমূলকে নিয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে মাঠে নামবে। আর সেই সাথে ছিনিয়ে আনবে আগামী সংসদ নির্বাচনের জয়।