বিজয় বার্তা ২৪ ডট কম
নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের সংসদ সদস্য সেলিম ওসমান বলেছেন, অনেকে জানতে চান আমি আগামীতে নির্বাচন করবো কি করবো না। আমি বলতে চাই যদি আমি জনগনের চাহিদা পূরণ করতে না পারি তাহলে আমি নির্বাচন করবো না। কোন দলের হয়ে নির্বাচন করার ইচ্ছা আমার নাই। আমার দল হবে জনগনের দল। আমি প্রতিটি ইউনিয়নের প্রতিটি ওয়ার্ডে যাবো। তখন যদি চেয়ারম্যান মেম্বাররা আমাকে দেখাতে পারেন আমার কারণে এলাকার মানুষ শান্তিতে আছে। এলাকার জনগন আমাকে চায় তখন আমি ঘোষণা দিবো আপনারা নির্বাচনের প্রস্তুতি নেন। আমি কোন ব্যক্তি স্বার্থে কাজ করতে পারবো না। যে কাজে আপনাদের এলাকার মানুষের উপকার হবে আমি সেটা করে দিবো। কেউ আমার কাছে টাকা চাইলে আমি দিতে পারবো না। কিন্তু কেউ যদি আমার কাছে উদ্যোক্তা হতে আমার পরামর্শ নিয়ে সহযোগীতা চান তাহলে আমি তাকে দিনে ৬ ঘণ্টা সময় দিতে প্রস্তুত। প্রয়োজনে আমি ব্যাংকের কাছে জামিনদার হয়ে লোনের ব্যবস্থা করে দিবো।
মঙ্গলবার ১৮ এপ্রিল রাত সাড়ে ৮টায় নারায়ণগঞ্জ ক্লাবের তৃতীয় তলায় শীতলক্ষ্যা কমিউনিটি সেন্টারে নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের আওতাধীন ৭টি ইউনিয়ন এলাকার চেয়ারম্যান, মেম্বার ও তার ব্যক্তিগত অর্থায়নে নির্মানাধীন স্কুল গুলোর পরিচালনা পর্ষদের সদস্যদের সাথে মত বিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
চেয়ারম্যান, মেম্বার ও নেতৃবৃন্দদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আমি জীবনেও আপনাদের নাসিম ওসমান হতে পারবো না। কারণ আমাকে আমার কারখানাটি চালাতে প্রতি মাসে ৭ কোটি টাকা ব্যয় করতে হয়। মাসে ২৬দিন কাজ করলে আমাকে কতখানি পরিশ্রম করতে হয় একবার ভেবে দেখুন। আমি যদি এই পরিশ্রমটা না করি তাহলে আমি ব্যাংকের কাছে ঋণখেলাপী হয়ে যাবো। তখন আপনারা শুনবেন আপনাদের এমপি ব্যাংকের টাকা মেরে দিছে। আমি আমার আয়ের ৩০ ভাগ এলাকার উন্নয়নের জন্য খরচ করেই যাবো। আমি এই শহরেই বাস চালিয়েছি। আজকে অনেকে প্রশ্ন তুলেন একজন ড্রাইভার এতো টাকা পেল কোথায়। তারা আমার ব্যাংকের স্ট্যাষ্টম্যান্ট নিয়ে যেতে পারেন। মাসে যদি আমি ৩০ লাখ ডলারের পন্য রপ্তানি করে থাকি তাহলে সেই হিসেবে আমি কোন খরচই করি না।
নারায়ণগঞ্জের সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, নারায়ণগঞ্জের উন্নয়নের সাংবাদিকদের দায়িত্ব নিতে হবে। অনেক সময় দেখা যায় সাংবাদিকেরা নিজেরাই নির্বাচনে মনোনয়ন দিয়ে দিচ্ছেন। শহরের নতুন করে নাস্তিক তৈরি হচ্ছে তারা ধর্ম নিয়ে কথা বলে, আল্লাহকে নিয়ে কথা বলে। এ বিষয় গুলোর ব্যাপারে সাংবাদিকদের বিশেষ নজর দিতে হবে।
এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন, নারায়ণগঞ্জ চেম্বার অব কর্মাস এন্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি খালেদ হায়দার খান কাজল, জেলা জাতীয় পার্টির আহবায়ক ও জেলা পরিষদের সদস্য আবুল জাহের, বন্দর থানা আওয়ামীলীগের সভাপতি এম এ রশিদ, নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার গোগনগর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নওশেদ আলী, আলীরটেক ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মতিউর রহমান, বন্দর উপজেলার কলাগাছিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেন প্রধান, বন্দর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এহসান উদ্দিন, মুছাপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মাকসুদ হোসেন, ধামগড় ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মাসুম আহম্মেদ, মদনপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এম এ সালাম, সংসদ সদস্য সেলিম ওসমানের ব্যক্তিগত অর্থায়নে নির্মানাধীন স্কুল পুরান সৈয়দপুর বঙ্গবন্ধু উচ্চ বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি আলী আকবর, শামসুজ্জোহা এমবি ইউনিয়ন উচ্চ বিদ্যালয়ের পরিচালনা কমিটির সভাপতি মঈনউদ্দিন, নাগিনা জোহা উচ্চ বিদ্যালয়ের উচ্চ বিদ্যালয়ের পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি গোলাপ হোসেন, সহ প্রতিটি ইউনিয়নের সদস্য এবং স্কুলে শিক্ষক পরিচালনা পর্ষদের নেতৃবৃন্দরা।
নিজের বক্তব্যের পর সভায় উপস্থিত বিভিন্ন ইউনিয়নের সদস্যদের বক্তব্য দেওয়ার জন্য মুক্ত মঞ্চ করে দেন। এ সময় ধামগড় ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের সদস্য ইয়াকুব আলী, কলাগাছিয়া ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডের সদস্য জিয়া উদ্দিন, গোগনগর ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের সদস্য সৈকত হোসেন, মোক্তার হোসেন সহ বেশ কয়েকজন সদস্য তাদের এলাকার সমস্যার কথা তুলে ধরেন।
এ সময় সেলিম ওসমান চেয়ারম্যান এবং মেম্বারদের ভবিষ্যতে নিজ নিজ এলাকায় যে সকল উন্নয়ন কাজ করা হবে সেগুলো অবশ্যই দৃশ্যমান উন্নয়ন হতে হবে বলে তিনি নিদের্শনা প্রদান করেন।