বিজয় বার্তা ২৪ ডট কম
৩০ অক্টোবর ব্রাহ্মনবাড়িয়ার নাসির নগরে ১৫টি মন্দিরসহ শতাধিক হিন্দু বাড়ি লুটপাট ও আগুন দিয়ে পোড়ানো হয়েছে। এ পর্যন্ত দেশের ১৪টি জেলায় মন্দির ও প্রতিমা ভাঙ্গা হয়েছে। হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়িতে হামলা ও লুটপাট হয়েছে। বাড়ি দখল ও জমিদখল করা হয়েছে। গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে ৪জন সাওতাল আদিবাসীকে হত্যা করে শত শত বাড়ীঘর পুড়িয়ে দিয়ে প্রায় ৫ হাজার বিঘা জমি থেকে তাদের উচ্ছেদ করা হয়েছে। বিভিন্ন জেলাায় আদিবাসী নারীদের ধর্ষন করা হচ্ছে। এইসকল সাম্প্রদায়িক হামলা রুখে দাড়ানোর জন্য বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি সিপিবি ১৫ নভেম্বর থেকে ৩০ নভেম্বর দেশের ৬৪ জেলায় একহাজার হাটসভা এবং গ্রাম পর্যায়ে সভা সমাবেশ ও মিছিলের কর্মসূচী ঘোষনা দিয়েছে। নারায়ণগঞ্জ জেলা কমিটি জেলার প্রতিটি থানায় সাম্প্রদায়িকতা বিরোধী হাটসভা, মিছিল ও সমাবেশ করবে। কেন্দ্রিয় এই কর্মসূচীর প্রথম দিনে ১৫ নভেম্বর মঙ্গলবার বিকাল ৩টায় নারায়ণগঞ্জ জেলা কমিটির উদ্যোগে আড়াইহাজারের পাঁচরুখী ও বান্টি বাজারে সাম্প্রদায়িকতা বিরোধী সমাবেশ ও মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন আড়াইহাজার থানা শাখার সম্পাদক কমরেড বিমল বর্মণ। বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি কমরেড মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম, কেন্দ্রীয় প্রেসিডিয়াম সদস্য কমরেড সাজ্জাদ জহির চন্দন, নারায়ণগঞ্জ জেলা কমিটির সভাপতি কমরেড হাফিজুল ইসলাম, নারায়ণগঞ্জ জেলা সম্পাদক মন্ডলীর সদস্য কমরেড বিমল কান্তি দাস, জেলা কমিটির সহ-সাধারণ সম্পাদক কমরেড রবীন্দ্র দাস, নারায়ণগঞ্জ জেলা কমিটির সদস্য কমরেড লোকনাথ বর্মন, নারায়ণগঞ্জ শহর কমিটির সভাপতি কমরেড আব্দুল হাই শরীফ, জেলা কমিটির সদস্য কমরেড নুরুল ইসলাম, কমরেড দিন দুনিয়া, কমরেড মোঃ হারিছসহ স্থানীয় নেতৃবৃন্দ।
নেতৃবৃন্দ বলেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসির নগরে সাম্প্রদায়িক হামলার সাথে সরকারী দল এবং প্রশাসনের কিছু কর্তা ব্যক্তিদের নাম উঠে এসেছে। বিভিন্ন জেলায় প্রতিমা ও মন্দির ভাঙার সাথে স্ব স্ব জেলার সরকারী দলের কারো কারো যুক্ত থাকার প্রমান মিলেছে। গাইবান্ধার ৪জন সাওতাল আদিবাসীকে হত্যা, বাড়ী ঘরে অগ্নি সংযোগ ও জমি থেকে উচ্ছেদের ক্ষেত্রে স্থানীয় এমপি ও পুলিশ প্রশাসনের বিরুদ্ধে জনগন অভিযোগ তুলেছে। বিভিন্ন জেলাায় আদিবাসী নারীদের ধর্ষন করা হচ্ছে। সরকার এ বিষয়ে কোন ব্যবস্থা নিচ্ছে না।
নেতৃবৃন্দ আরো বলেন, সমাজে সাম্প্রদায়িকতার প্রভাব বৃদ্ধি পাচ্ছে। ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের উপর জুলুম অত্যাচার ক্রমাগত বেড়েই চলেছে। তাঁদের জীবন, সম্পত্তি, জমিজমা পরিকল্পিত হামলার সস্মুখীন হচ্ছে। তাদের উপর হামলা করছে সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠী, টাউট দখলদার, বিএনপি, জামাত, জাতীয় পার্টি ও আওয়ামীলীগের নেতা কর্মীরা। সংখ্যালঘুদের দেশান্তরের ঘটনাও বাড়ছে। অর্পিত সম্পত্তি প্রত্যার্পণ আইনসহ অনেক কালাকানুনের কুফল তাঁদের উপর চেপে বসে আছে। দেশের সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায় ছাড়াও বিভিন্ন ক্ষুদ্র জাতিসত্বা, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান ও অনেক ক্ষেত্রে ভিন্ন তরিকায় অনুসারী মুসলমানের উপরও আক্রমন বাড়ছে। সকল প্রকার সাম্প্রদায়িকার বিরুদ্ধে দেশের সকল বাম ও প্রগতিশীলদের ঐক্যবদ্ধ হওয়া উচিত। বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি এই সকল হামলা মোকাবেলা করার জন্য জনগনকে ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান জানাচ্ছে।