বিজয় বার্তা ২৪ ডট কম
নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সাংসদ একেএম শামীম ওসমান বলেছেন, আমার ধর্মের নামে কটূক্তিকারী রফিউর রাব্বীর বিরুদ্ধে শুক্রবার জুম্মার নামাজের পর নারায়ণগঞ্জ ডিআইটি জামে মসজিদের সামনে সমাবেশে করবো। সেখানে সকল দলের অংশগ্রহণ থাকবে, সেখানে আওয়ামীলীগ, বিএনপি, জাতীয় পার্টি, হেফাজতসহ সকল মানুষের অংশগ্রহণ থাকবে। আল্লাহর রহমতে আমার ডাকে কয়েক লাখ মানুষ সমাবেশে জমায়েত হবে।
বুধবার (১৯ এপ্রিল) সকাল ১১ টায় সিদ্ধিরগঞ্জের মিজমিজি কবর স্থান জামে মসজিদের আলেম ওলামাদের নিয়ে আলোচনার সময় এসব কথা বলেন তিনি।
শামীম ওসমান বলেন, এসব নাস্তিকদের জন্য আমার চোখের ইশারাই যথেষ্ট। কিন্তু আমি নারায়ণগঞ্জে একটি নজির স্থাপন করতে চাই, যারা ধর্মের নামে কটুক্তি করে তাদের বিরুদ্ধে সবাইকে নিয়ে আমি এক মঞ্চে প্রতিবাদ করতে চাই। তাদের প্রতি ঘৃনা প্রদর্শন করতে চাই।
তিনি আরো বলেন, নারায়ণগঞ্জের মত একটা শহরের প্রান কেন্দ্র শহীদ মিনারে দাঁড়িয়ে বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম নিয়ে এত বড় কথা বললো তবুও কেউ প্রতিবাদ করলোনা, প্রতিবাদ করার মত একটা মানুষও খুঁজে পাওয়া গেলনা। একা হেফাজতের ফেরদৌস মামলা করলো, আর দুএকজন কথা বললো তা ছাড়া কেউ কিছু বললোনা। এটা হেফাজতের ফেরদৌস না, এটা একজন মুসলমান হিসেবে ফেরদৌস মামলা করেছে। আমি ছোট বেলা থেকেই দেখে এসছি আমার মা, বাবা, ভাই, বন্ধু বান্ধব সবাই কোন কাজ শুরু করার আগেই বিসমিল্লাহ বলে শুরু করি। আজকে সেই বিসমিল্লাহ নিয়ে কথা বলা হলো, বলা হলো সংবিধানে বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম থাকবে জানলে নাকি মুক্তিযুদ্ধে কেউ শহীদ হতোনা। আমার ধর্মকে নিয়ে কথা, অবশ্যই আর কেউ প্রতিবাদ না করলেও আমি একাই এর প্রতিবাদ করবো কারণ আমার এখানে দায় আছে আমি আপনাদের সংসদ সদস্য। মৃত্যুর পর আমাকে আমার আল্লাহ জিজ্ঞাসা করলে তখন আমাকে জবাব দিতে হবে।
তিনি আরো বলেন, এরা এ ধরনের বক্তব্য দিয়ে আমাদের সমাজে জঙ্গীবাদ সৃষ্টি করে। এরা ধর্মের বিরুদ্ধে বক্তব্য দেয় আর আমাদের ধর্মভীরু তরুণ যুবকদের পিন খেলা হয় যে দেখ তোমার ধর্মকে নিয়ে এভাবে নোংরামি করা হচ্ছে কেউ কিচ্ছু বলছেনা আর আমাদের তরুণ সমাজ জঙ্গীবাদে জড়ায়। আগে এদেরকে গ্রেফতার করতে হবে তাহলেই জঙ্গীবাদ নির্মূল একধাপ আগাবে।
এমপি শামীম ওসমান বলেন, আমি আওয়ামীলীগ করি এবং শেখ হাসিনার সৈনিক এটা আমার দ্বিতীয় পরিচয়, আমার প্রথম পরিচয় আমি একজন মুসলিম। আর তাই কেউ প্রতিবাদ করুক আর না করুক আমি শুক্রবার জুম্মার নামাজের পর ডিআইটি মসজিদের সামনে গিয়ে তাদের বিরুদ্ধে ঘৃনা প্রদর্শন করে আসবো। আমি মুসলিম হিসেবে আপনাদেরকে দাওয়াত দিতে এসেছি এখন প্রতিবাদ করা না করা আপনাদের ইচ্ছা।
তিনি বলেন, ২০০৪ সালের ১৬ জুন চাষাঢ়া বোমা হামলায় আমিতো মরেই গিয়েছিলাম, আমার কত সহকর্মীর রক্তে আমি রঞ্জিত হয়েছি। এর পর বিএনপির আসার পর যখন আমি দেশের বাইরে ছিলাম তখন আমার নেত্রীর সাথে একবার নিউইয়র্ক দেখা হয়। গাড়ীতে তার সাথে আমার কথা হলো, আমি তাকে বললাম আপা এত সৎ থেকে কি হলো অর্থ কষ্টে আছে দলের সবাই, আপনি আপনার ছেলে। আরো অনেক কথা হলো। আমার অনেক কথাও বললাম নেত্রী তখন চোখের পানি মুছে বললেন শামীম তুমি হতাশ হয়েছ? আমি বললাম হ্যাঁ আপা আমি কিছুটা হয়েছি, আপা আমাকে বললেন কখনো হতাশ হবানা আমাদের রাসুল (সাঃ) এর জীবনী পড়বা, তার আদর্শ অনুসরণ করবা। আমি সেই নবীর আদর্শ অনুসরণ করবো। ইসলাম শান্তির ধর্ম, আমাদেরকে আমাদের রাসুল শিক্ষা দিয়েছেন বিধর্মীদের নিরাপত্তা দিতে, আর সেই ধর্মকে নিয়ে কথা বললে কাউকে ছাড় দেয়া হবেনা। শামীম ওসমান বলেন, আজকে আমি সবাইকে হুশিয়ারি দিয়ে বলতে চাই, এই নারায়ণগঞ্জে কেউ যদি ইসলাম ধর্মকে নিয়ে কটুক্তি করে তবে তার আর কোন ছাড় নেই। শুধু নারায়ণগঞ্জ নয়, দেশের কোথায় এটা হতে দেয়া হবেনা। আর ইমাম সাহেবতো বলেই দিয়েছেন আবার যদি এরকম দুঃসাহস দেখানো হয় তবে ওমরের মত তরবারি নিয়ে মাথা থেকে গলাটা আলাদা করে দেয়া হবে।
শামীম ওসমান বলেন, আমি এখন আপনাদেরকে দাওয়াত দিচ্ছি, পরে বন্দর যাবো দাওয়াত দিতে। সবাইকেই একদিন মরতে হবে। এর আগেও ইসলামকে ছোট করতে প্রথম আলো উঠে পড়ে লেগেছে, আমি জানি শুক্রবারের পর আমার উপরও একটু ঝড় যাবে। সেই ঝড়কেও আমি ভয় পাইনা।
এমপি আরো বলেন, এখানে আমার কোন রাজনৈতিক উদ্দেশ্য নেই, আমি আমার ইমানী দায়িত্ব থেকেই এখানে এসেছি। কারণ আমার মৃত্যুর পর যদি আপনারা এখানে এসে আমার জন্য দোয়া করেন যে এই লোকটা ভালো মানুষ ছিল, ধর্মের জন্য মাঠে নেমেছে আল¬াহ তুমি এই ব্যক্তির সকল গুনাহ ক্ষমা করে দাও। আপনাদের এই দোয়াই হবে আমার পাওয়া। এ সময় তিনি সঠিক পথে আছেন কিনা জিজ্ঞাসা করলে উপস্থিত আলেম ও সাধারণ মানুষরা দুহাত তুলে তাকে সমর্থন জানিয়ে বলেন আপনি সঠিক পথেই আছেন।