মন্তব্য প্রতিবেদন,হাবিবুর রহমান বাদল,বিজয় বার্তা ২৪
পাঠক সমাজের কাছে আমাদের দায়বদ্ধতা থেকে ডান্ডিবার্তা পরিচালনা পরিষদ সিদ্ধান্ত নিয়েছে আগামি পহেলা জুন থেকে ডান্ডিবার্তার সম্পাদকীয় নীতিমালার কিছু পরিবর্তন ঘটানোর। ডান্ডিবার্তা যেহেতু একটি পাঠ নির্ভর ও পাঠক প্রিয় দৈনিক সেহেতু পাঠকদের মতামতের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে দৈনিক ডান্ডিবার্তা পরিচালনা পরিষদ এই পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত গ্রহন করেছে। সময়ের সাথে পাল্লা দিয়ে অনেক কিছুই পাল্টে গেছে। ডিজিটাল যুগে দৈনিক ডান্ডিবার্তা মনে করে কোন চমক নয়-সত্য ও বস্তুনিষ্ট সংবাদ প্রকাশে আমরা অতীতের মত আগামিতেও অনড় থাকব। যদিও গত দেড় দশক যাবত ডান্ডিবার্তা সংবাদ প্রকাশের ক্ষেত্রে বস্তুনিষ্টতা বজায় রাখার আপ্রান চেষ্টা করেছে। পাশাপাশি বলতে দ্ধিধা নেই ক্ষেত্র বিশেষে কোন কোন সংবাদ প্রকাশ করার ক্ষেত্রে আমরা কাউকে কাউকে বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছি। যদিও সংবাদের প্রয়োজনে এই গুরুত্ব দেয়া হয়েছে তারপরেও আমরা মনে করি সবার প্রতি তেমন একটা সুবিচার করতে পারিনি। এক্ষেত্রে আমাদের ইচ্ছাকৃত ভূলত্রুটি না থাকলেও ডান্ডিবার্তার সম্পাদক হিসেবে সকল দায়িত্ব আমি নিসংকচিত্ত্বে স্বীকার করে নিচ্ছি। তাই দৈনিক ডান্ডিবাতা পরিচালনা পরিষদ মনে করে সময় এসেছে ডান্ডিবার্তার নীতিমালা পরিবর্তনের। তবে এ পরিবর্তনের ক্ষেত্রে আমরা কোন অবস্থাতেই অন্যায়ের কাছে মাথা নত করব না। যে কোন তথ্য বহুল সংবাদ তা যদি প্রকাশের যোগ্য হয় সে যত বড় ক্ষমতাবানই হউক ডান্ডিবার্তা দ্বিধাহীন চিত্তে তা প্রকাশ করবে। কোন হুমকি ধামকি কিংবা কারও রক্তচক্ষুর কাছে দৈনিক ডান্ডিবার্তা অতীতে যেমন মাথা নত করেনি তেমনি আগামিতেও মাথা নত করবে না। সত্য প্রকাশে অবচল দৈনিক ডান্ডিবার্তার মূল সম্পদ পাঠকপ্রিয়তা। পাঠকের কারনেই গত দেড় যুগ যাবত দৈনিক ডান্ডিবার্তা আপোষহীনভাবে সংবাদ প্রকাশ করে যাচ্ছে। আমরা কারো আঙ্গুলি হেলুনিতে সংবাদ প্রকাশ করি না বলেই অতীতে ডান্ডিবার্তা ও সম্পাদক হিসেবে আমার উপর এবং ডান্ডিবার্তা পরিবারের উপর হামলা মামলা হয়েছে। আমাকে হত্যার চেষ্টাও কম করা হয়নি। সেই চেষ্টা এখনো অব্যাহত আছে। তবে, আবারো মহান সৃষ্টিকর্তার প্রতি অবিচল বিশ্বাস এবং পাঠক পাঠিকাদের সহানুভূতি ও বিজ্ঞাপন দাতাদের সহায়তায় আমরা এখনো টিকে আছি। আগামিতেও এই ভাবেই সত্য ও ন্যায়ের পক্ষে থেকে ডান্ডিবার্তা তার অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখবে। এক্ষেতে কোন ষড়ন্ত্রকারী ষড়যন্ত্র আমাদের অভিষ্ট লক্ষ্যে পৌছতে বাধা সৃষ্টি করতে পারবে না বলে আমরা দৃঢ় ভাবে বিশ্বাস করি। দৈনিক ডান্ডিবার্তা জন্ম লগ্ন থেকেই সবলের বিপক্ষে থেকে দুর্বলকে সমর্থন দিয়েছে। অন্যায়কারী যত শক্তিশালীই হউক এক সময় যে তার মুখোশ জনসম্মুখে উন্মেচিত হয় তার প্রমান ডান্ডিবার্তার পাঠকরা একাধিকবার দেখেছে। কারো দয়া কিংবা দাক্ষিনাত্য নিয়ে দৈনিক ডান্ডিবার্তা আতœপ্রকাশ করেনি। এমনকি যারা দৈনিক ডান্ডিবার্তার বিরুদ্ধে একের পর এক ষড়যন্ত্র করেছে আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার কিংবা মিথ্যা মনগড়া তথ্য দিয়ে সামাজিকভাবে হেও প্রতিপন্ন করার চেষ্টা করেছে মহান সৃষ্টিকর্তা বার বার আমাকে রক্ষার পাশাপাশি ঐ মহলকে তাদের আসলরূপ জনসম্মুখে প্রকাশ করেছে। ডান্ডিবার্তা সাদাকে সাদা এবং কালোকে কালো জন্মলগ্ন থেকেই বলে আসছেন। কিন্তু তাই বলে ব্যাক্তিগত কিংবা উদ্দেশ্য প্রনোদিতভাবে ডান্ডিবার্তা কখনো মিথ্যা মনগড়া তথ্য দিয়ে সংবাদ প্রকাশ করেনি। তবে বলতে দ্বিধানেই বিগত প্রায় দেড় দশকে ডান্ডিবার্তা সম্পাদককে খরিদ করতে না পেরে কোন কোন কুচক্রিমহল ডান্ডিবার্তার কোন কোন অসৎ কর্মীকে খরিদ করে লোভ লালসা দিয়ে আমার অজান্তে হয়তো বা কোন সংবাদ প্রকাশ করেছে। কিন্ত আমার দৃষ্টিতে আশার সঙ্গে সঙ্গে সেই সব লোভী কর্মীদের ডান্ডিবার্তা তাৎক্ষনিকভাবে শুধু অব্যাহতিই দেইনি অকপটে সেইসব সংবাদের জন্য ডান্ডিবার্তা দুঃখ প্রকাশ করে নজির সৃষ্টিও করে। এমন অনেক প্রভাবশালী মহলের দুঃসময়ে ডান্ডিবার্তা নীতিগত কারনে তাদের কোন প্রকার অনুরোধ কিংবা স্বার্থ ছাড়াই পাশে দাড়িয়েছে। কারন, আগেই বলেছি ডান্ডিবার্তা সব সময় দুর্বলের পক্ষে এবং সবলের বিপক্ষে সত্য ও ন্যায় প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে কাজ করেছে। ডান্ডিবার্তা একমাত্র পত্রিকা যা আর্থিক দৈণ্যতা স্বত্বেও নারায়ণগঞ্জের প্রতিষ্ঠিত ও স্বনামধণ্য রাজনীতিবীদদের, শিল্পি, সাহিত্যিক, সাংবাদিকদের নিয়ে বিশেষ আয়োজন করেছি। ডান্ডিবার্তাই প্রথম সপ্তাহে সাতদিন পাঠকদের চাহিদা অনুযায়ী আলাদা আলাদা বিভাগ প্রকাশ করে। আজ আমি গর্ব করে বলতে পারি নারায়ণগঞ্জ থেকে প্রথম নিয়মিত দৈনিক পত্রিকার সম্পাদকের দায়িত্বটিও আমিই পালন করেছি। ডান্ডিবার্তা হাউজের আমার একাধিক সহকর্মী এখন স্থানীয় একাধিক পত্রিকার মালিক। একাধিক অনলাইনের সর্বোচ্চ কর্তা। এমনকি জাতীয় পর্যায়ের অনেক দৈনিক ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় ভাল অবস্থানে রয়েছে আমার অনেক প্রানপ্রিয় সাথী। সত্যকে লোকাতে চেষ্টা করিনি বলেই কিংবা নীতি আর্দশের সাথে বেঈমানী করিনি বলেই প্রচন্ড আর্থিক দৈন্যতার মধ্যেও টিকে আছি। আমরা নিজ গুনে গুনান্বিত হতে চাই। ডান্ডিবার্তা আহামরি ধরনের দৈনিক একথা আমরা দাবিও করি না। তবে, পাঠকপ্রিয়তায় আমাদের অবস্থান কোথায় তা বিচারের মালিক শুধু মাত্র পাঠক সমাজই। এত কথা বলার কারন হলো ডান্ডিবার্তা গর্ব করতে পারে গত এক বছর নিজেদের স্বার্থের কথা চিন্তা না করে নারায়ণগঞ্জবাসী তথা নারায়ণগঞ্জের উন্নয়নের স্বপ্ন দেখেছে। আর এই উন্নয়নের জন্য সর্বপ্রথম প্রয়োজন রাজনৈতিক দল, জণপ্রতিনিধি, ব্যবসায়ী, সাংবাদিক, আইনজীবি, সুশীল সমাজ তথা বিবেকবান মানুষের ঐক্য। আর এ ঐক্য এখন অনেকটা দ্বাড়প্রান্তে বলাচলে। সাংসদ সেলিম ওসমান পরবর্তীতে সাংসদ শামীম ওসমান একাধিকবার ঐক্যের ডাক দিয়ে আসছে। আর নাগিনা জোহার মৃত্যুর পর তার জানাযায় সমগ্র মানুষের এককাতারে উপস্থিতি এবং নারায়ণগঞ্জবাসীর সেন্টিম্যান্ট শহরের এই তিন প্রভাবশালীর জনপ্রতিনিধি যখন অনুভব করতে শুরু করলেন তখন নারায়ণগঞ্জে শুরু হল আবার নতুন ষড়যন্ত্র। আমরা সেই ষড়যন্ত্র উন্মোচনের চেষ্টা মাত্র করেছি। যেহেতু আমাদের হাতে বাস্তব প্রমান নেই সেহেতু আমাদের কোন প্রতিবেদনে ষড়যন্ত্রকারী কে কিংবা কারা ঐক্য বিনষ্টের ষড়যন্ত্র করছে কোথাও তা স্পষ্ট করে বলিনি। কিন্তু হঠাৎ করে দেখলাম একটি চাঁদাবাজি মামলার ৭ বছরের সাজাপ্রাপ্ত এক আসামি আমাদের একটি ভাল উদ্যোগকে নষ্ট করার লক্ষ্যে আমার চরিত্রহরনের দায়িত্বটিও সুচারোরূপে পালন করেছেন। পাশাপাশি আমি দ্বিধাহীন চিত্তে বলতে চাই ডান্ডিবার্তা অণ্যকারো আর্থিক সুবিধা নিয়ে প্রকাশ করেনা। তারপরেও আমাকে ওসমান পরিবারের পোষ্য এবং মেয়রের কাছ থেকে বিভিন্ন সুযোগসুবিধা নেয়ার কথা বলার পরেও এই দুই পরিবারের পক্ষ থেকে পক্ষে ও বিপক্ষে কোন বক্তব্য পাইনি। একটি চরম মিথ্যা কথাকে এভাবে বলার পরও কোন পক্ষ সত্য প্রকাশ না করায় আমাকে হতাশ করেছে। কোন লোক কাকে দান করল, তা নিজের অর্থ কাকে বিলিয়ে দিল কিংবা সে কার সাথে চলবে অথবা চলবে না এ ধরনের গাইডলাইন দেওয়ার মত দৃষ্টতা আমার নেই কিংবা এ ধরনের মন মানষিকতা নিয়ে আমি গড়ে উঠিনি বলেই হাতেগুনা কয়েকজন সহকর্মীকে নিয়ে অপসাংবাদিকতা বন্ধে কাজ করে যাচ্ছি। তারপরেও আমি মনে করি আমি হারিনি। নারায়ণগঞ্জবাসী জিতেছে। কারন, দেরীতে হলেও বঙ্গবন্ধুর জন্মদিনে মেয়র আইভী এই প্রথম নারায়ণগঞ্জে শান্তি ও উন্নয়নের লক্ষ্যে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন। আমি আমার পক্ষ থেকে আমার চেয়ে অনেক জ্ঞ্যানী নারায়ণগঞ্জের গণমাধ্যমের সহকর্মীদের নিকট বিনীত অনুরোধ নিজেদের মধ্যে কাদা ছোড়াছোড়ি বন্ধ করে আসুন নারায়ণগঞ্জকে একটি শান্তির জনপদে পরিনত করি। আর এক্ষেত্রে আমাদের ঐক্য আমাদের বস্তুনিষ্ট ও নিরপেক্ষ লেখনি নারায়ণগঞ্জকে একটি আধুনিক নগরীতে পরিনত করতে পারে। আমি জানি আমার উপর যে কোন সময় আঘাত আসতে পারে কারন ষড়যন্ত্রকারীদের স্বার্থ নষ্টের জন্য হয়তো আমাকে দায়ী করবে। কিন্তু সত্য প্রকাশে আমি একচুল পিছপা হবো না। কারন“ আমি আল্লাহ ছাড়া কাইকে ভয় করি না”। সুতরাং, আগামি পহেলা জুন থেকে বদলে যাবে ডান্ডিবার্তার অনেক কিছুই। আমরা বঙ্গবন্ধু, মুক্তিযুদ্ধ এবং স্বাধীনতার পক্ষের সকল শক্তির সংবাদ তার প্রাপ্য অনুযায়ী প্রকাশ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এক্ষেত্রে স্বাধীনতা বিরোধী শক্তি তথা জঙ্গী,ভূমিদস্যু, মাদক ব্যবসায়ী ও সমাজ বিরোধীদের সাথে কোন আপোষ করব না। আল্লাহ আমাদের সহায় হউক এই কামনা করে পাঠক, বিজ্ঞাপন দাতা ও সহকর্মী সহযোদ্ধাদের কাছে আবারও অতীতের সকল মতভেদ ভূলে আধুনিক নারায়ণগঞ্জ গড়তে এক হওয়ার জন্য বিনীত অনুরোধ জানাচ্ছি।
হাবিবুর রহমান বাদল
লেকক সাবেক সভাপতি নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাব
ও নারায়ণগঞ্জ নিউজ পেপারস ওনার্স এসোসিয়েশন